ক্রাশের মেসেজ
– এই সব পোস্টে খালি ক্রাশ ক্রাশ কী লিখিস বল তো?
– কেন? কী সমস্যা?
– তোরও ক্রাশ আছে?
– কেন থাকবে না!
– তা কে সেটা শুনি!
– মানে? সেটা তোকে কেন বলব?
– বল না। সবার কমেন্ট দেখে তো মনে হচ্ছে সবাই জানে!
– সবাই জানে না। ঐ আর কি। কয়েকজন জানে!
– বল না আমাকে! কে তোর ক্রাশ!
– নাহ বলা যাবে না! খুব ব্যক্তিগত!
– বড্ড ন্যাকামো করিস মাঝে মাঝে!
– এটা ন্যাকামো না। সব জিনিস সবাই কে বলা যায় না। তোকে যদি জিজ্ঞেস করি তোর বয়ফ্রেন্ডের নাম কী? তাহলে কী বলবি?
– তুই যেন জানিস না! আমার বয়ফ্রেন্ড নেই!
– সেই!
– মানে? বয়ফ্রেন্ড থাকতেই হবে তার কী মানে!
– কি জানি! এরকম সুন্দর দেখতে একজন মেয়ে তার সাথে ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। এত সুন্দর গান গায়! তার নাকি বয়ফ্রেন্ড নেই! যত্তসব!
– কী হয়েছে বল তো তোর হঠাৎ? এসব ভুলভাল কথা বলছিস কেন?
– কে শুরু করেছে ভুলভাল কথা!
– তাহলে বলবি না তাই তো!
– নাহ! বললে চাপ আছে!
– কী চাপ?
– সেটা তুই বুঝলে তো হয়েই যেত!
– ছাড় বলতে হবে না। আর জিজ্ঞেস করব না।
– সেটাই বেটার!


– কীরে বলল?
– নাহ! ধুর! ওর বাল দম নেই!
– আরে দাঁড়া দাঁড়া। বললে যদি তুই ঘ্যাম নিস! তাই হয়ত!
– একবার ভরসা করে বলতে পারছে না নাকি ভাই! কীসের এত ভয়?
– আরে ঠিক আছে। একদিন না একদিন ঠিক বলবে!
– ধুর বাল! আমি জানি আমি ওর ক্রাশ। ওর পোস্টে পরিষ্কার বোঝা যায়! তা সেটা খোলসা করে বলে দিলেই ঝামেলা মিটে যায়! কিছু এগোনো যেত তখন। কিন্ত এ বাল বলবে না!
– বলবে রে! উফফ! তুই এত অধৈর্য হচ্ছিস কেন?
– বাল বলবে। ও জীবনেও বলতে পারবে না!
– চ্যালেঞ্জ?
– এই ক্যালানে চুপ কর তো! সব সময় খালি দেবের মত চ্যালেঞ্জ চ্যালেঞ্জ! আমি মরছি আমার জ্বালায় আর একে চ্যালেঞ্জে পেয়েছে!
– একটা কথা বলি?
– বল…
– তুই ওকে বলে দে!
– What?
– তুই ওকে বলে দে! যে তোর ওকে ভালো লাগে!
– তুই ছেলেদের চিনিস না? এটা বললে আর দেখতে হবে না। অহংকারে মরে যাবে মালটা!
– তাহলে কী করবি?
– যা করে এসেছি এতদিন! ওয়েট করব!


ক্রাশকে মেসেজ

– শোন না…
– বলে ফ্যাল!
– তুই কি আমার ওপর রাগ করেছিস?
– কেন?
– না মানে তখন ক্রাশের নাম জিজ্ঞেস করলি বললাম না বলে!
– কী আর হবে? ভরসা করিস না যখন বলতে হবে না!
– না মানে ভরসা না। মানে যদি হাসিস তাই ভাবলাম আর কি!
– হাসব কেন? আশ্চর্য! তোর ক্রাশ জোকার নাকি?
– না না। মানে… উফফ! একটু Weird লাগতে পারে তোর!
– বুঝলাম। ঠিক আছে। যখন ভরসা করতে পারিস বলিস। চাপ নেই!
– আচ্ছা ফাইন বলছি। হাসবি না তো!
– আরে নারে ভাই, হাসব না! বল।
– শিওর তো! কাউকে বলবি না তো!
– এতো আচ্ছা গান… ইয়ে… বেশী ঢং না করে বল। কে তোর ক্রাশ!
– আচ্ছা বলছি… um… আমার ক্রাশ… মানে…
– হ্যাঁ… ?
– মানে… আসলে…
– ধুর মড়া! বল না…
– আমার… ক্রাশের নাম… Kat… Katrina Kaif!
– What?
– হ্যাঁ
– What???????
– কী?
– কী বললি তুই!
– আমার ক্রাশের নাম…
– বাল পুরো দুনিয়া শুদ্ধ লোক জানে আমি তোর ক্রাশ। আর আমার কাছে ন্যাকামো মারাচ্ছো তুমি?
– What? মানে তুই??
– আমি সব জানি ছাগল!
– না মানে… আসলে…
– আর মানে মানে করতে হবে না। ভাগ এখান থেকে। একটা সত্যি কথা বলার দম নেই! আবার প্রেম করবে।
– আরে তুই আমার কথাটা শোন…
– কোনো কথা শোনা হবে না। দূর হ আমার ইনবক্স থেকে…
– আমি… বিরিয়ানি বানাতে পারি…
– What? কি হয়েছে?
– আমি… আমি বিরিয়ানি বানাতে পারি?
– কী ভাবিস কী তুই? সব গল্পের শেষে বিরিয়ানি লিখে দিবি আর পাব্লিক খেয়ে নেবে? ইয়ার্কি নাকি? বিরিয়ানি দেখিয়ে মেয়ে পটে যাবে?
– দেখিয়ে না… খাইয়ে!
– তুই আর একটাও মেসেজ করবি না আমাকে…
– আমি…
– উহু! আর একটাও মেসেজ না। একটাও না… শেষবারের মত বলছি…
– …
– গুড! কাল দুপুরে বিরিয়ানি বানিয়ে আমার বাড়িতে আয়! তার পর ভেবে দেখব তোকে কথা বলতে দেওয়া যাবে কিনা!
– …
– ঠিক আছে একটা স্মাইলি অ্যালাউড!
– <3
– <3

ক্রিস ক্রাশ

Arnab Mondal


হিজিবিজি লেখা আর বিরিয়ানি নিয়ে Phd করছি আর আকাশবাণী কলকাতায় নিজের কন্ঠস্বর ভাড়া দিয়ে সংসার চালাচ্ছি।


Post navigation


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করবেন না দাদা/দিদি