২৯ শে এপ্রিল, রাত ১০ টা
– শোন
– বল
– দেখছিস চারপাশে কী হচ্ছে?
– হ্যাঁ। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না রে। কি হচ্ছে এসব?
– হুম। ইরফান খান মারা গেলেন ভাবা যায়!
– সত্যিই এরকম একজন মানুষ মারা গেলেন! আমি জাস্ট…
– সব আমাদের জন্যে।
– আমাদের জন্যে মানে?
– মানে? তোর আর আমার জন্যে।
– কী? কী বলছিস?
– দ্যাখ আমাদের ১১ বছরের সম্পর্ক ছিল। ইউনিভার্স টাতে একটা ব্যালান্স বজায় ছিল। আমরা ২০২০ র জানুয়ারী মাসে ব্রেক আপ করলাম। সেই ব্যালান্স টা ভেঙে গেল। তারপর থেকেই খারাপ জিনিসগুলো শুরু হল।
– তুই গাঁজা টা খেয়ে মেসেজ করছিস আজ?
– না না তুই একবার ভেবে দ্যাখ… লকডাউন… এত মৃত্যু। প্রথমে মারা গেলেন ইরফান খানের মা। তারপর চলে গেলেন ইরফান খান! সব আমাদের জন্যে!
– ধুর! বাজে বকিস না। আমরা এতটাও ইম্পর্ট্যান্ট কেউ না যে আমাদের জন্য সারা পৃথিবীতে এরকম ভয়ংকর অবস্থা শুরু হয়ে যাবে।
– না না। আমি সেটা বলছিও না। কিন্তু আমাদের জন্য একটা Balance ছিল পৃথিবীতে। সেটা আমরা হঠাৎ করে ভেঙে ফেলেছি তাই এটা হচ্ছে।
– তুই একা একাই গাঁজাটা শেষ কর বুঝলি। আমার কাজ আছে।
– ফাইন। বিশ্বাস করিস না। দ্যাখ আরও কত কী হয়!
৩০ শে এপ্রিল, দুপুর ১২ টা
– ঋষি কাপুর মারা গেলেন!
– হুম। জাস্ট দেখলাম। কী হচ্ছে আমায় একটু বলবি এটা? এরকম কেন হচ্ছে?
– আমি তোকে বলেছিলাম কেন হচ্ছে। তুই বিশ্বাস করিস নি।
– তুই থাম ছাগল। I am serious. এই বছর টা আর কী কী নিয়ে বসে আছে ঝুলিতে কে জানে?
– এখনও বিশ্বাস করছিস না তো?
– না করছি না। ভাট বকিস না। একটার পর একটা মানুষ চলে যাচ্ছে আর তুই এদিকে ইউনিভার্সের ব্যালান্স নিয়ে পড়েছিস বাল!
– সাবধানে থাক। দিনকাল ভালো না।
– তুই সাবধানে থাক!
৩০ শে এপ্রিল, দুপুর ২ টো বেজে ৩০
– Wtf!
– কী?
– Finding Nemoর পরিচালক মারা গেলেন। এক্ষুনি দেখলাম।
– অসাধারন! ফাটাফাটি। বলেছিলাম আমি তোকে। আমাদের জন্যে হচ্ছে। এবং আরও হবে এরকম।
– তার মানে তুই চাস এটা হোক?
– আমি একদম চাই না। কিন্তু উপায় কি? আমাদের সম্পর্ক না থাকলে এটাই হবে!
– ধুর বাল। তুই তো সুপারহিরো সুপারহিরো করিস সব সময়। তুই বাঁচা ইউনিভার্স কে! আমাকে বলছিস কেন?
– আমার একার হাতে তো নেই। সম্পর্ক টা আমাদের দু’জনের ছিল। কারুর একার ছিল না। আমি একা কী করব?
– তার মানে বলছিস সমাধান একটাই? আমাদের দু’জনের প্যাচ আপ করা।
– না। শুধু তা না। আর একটা অপশন আছে।
– কী সেটা?
– আমাদের মধ্যে কোনো একজন কে মারা যেতে হবে। তাহলেও হবে।
– What?
– হ্যাঁ রে। এটাও হবে… কারন…
– কী বললি শূয়র!! লকডাউন কাটলে তোকে আমি খুন করে ফেলব জানিস! আর একবার এসব যদি বলিস!
– তুই বুঝছিস না। ইউনিভার্স চাইছে তুই আর আমি আবার একসাথে হয়ে যাই। কিন্তু আমাদের মধ্যে একজন মারা গেলে সেটা আর ও চাইবে না। তাহলে ও হার স্বীকার করবে। পৃথিবী বেঁচে যাবে।
– এসব গান্ডুগিরি অন্য জায়গায় করিস বাল। সব সময় এরকম High হয়ে থাকিস কেন? এত স্টাফ পাস কোথায়?
– আবার তুই ভুলভাল বকছিস! অবিশ্বাস করছিস। আমি তোকে আগেও সাবধান করেছিলাম। আবারও করছি। ঠিক হচ্ছে না এটা।
– তুই যা। কাজ কর। এসব ভুলভাল থিওরি আমাকে শোনাস না।
৩০শে এপ্রিল, বিকেল ৫ টা ৩০
– আশা করি খবর টা পেয়েছিস!
– চূনী গোস্বামী! এটা কী হচ্ছে প্লিজ বল। প্লিজ তুই বল আমায় এটা কী হচ্ছে! কেন হচ্ছে এরকম!
– আমি তোকে বলেছি অলরেডি, কতবার বলাবি আমাকে দিয়ে। আমাদের জন্যে হচ্ছে এটা। আমরা পৃথিবী টাকে ঘেঁটে দিয়েছি। আমরা… আমরা পুরো ইউনিভার্স এর ভারসাম্য টাই নষ্ট করে দিয়েছি। আমরা যদি না সামলে নিই তাহলে কিন্তু এরপর আরও দুর্ঘটনা ঘটতে চলেছে।
– কিন্তু… আমরা… মানে…
– আমরা চাইলেই সব ঠিক হতে পারে। তুই কি চাস সেটা?
– কিন্তু আমরা ব্রেক আপ করেছিলাম বেশ কয়েকটা কারনে… সেগুলোর কী হবে?
– এতগুলো মানুষ মারা গেছে। তারপরেও তুই নিজেদের কথা ভাবছিস? তুই ইউনিভার্স কে বাঁচাতে চাস কিনা বল আগে…
– সে তো চাই… কিন্তু…
– এক সেকেন্ড দাঁড়া…নোটিফিকেশন এল…
– কী? আবার কি?
– Wow!
– কী হল টা কী?
– আমাদের যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাড়াতাড়ি নিতে হবে!
– মানে? আবার কী হল?
– মিঠুন চক্রবর্তী এবং নাসিরুদ্দিন শাহ নার্সিং হোমে ভর্তি।। গুরুতর অবস্থা।
– Shit! Shit dude. What is happening?
– হুম। বল তাড়াতাড়ি।
– তার মানে আমরা প্যাচ আপ করছি ইউনিভার্সের জন্যে?
– একদম শুধুমাত্র ইউনিভার্সের জন্যে!
– ফাইন। তাই হোক! তাহলে। আর কোনো উপায় নেই যখন।
– For the Universe Then.
– For the Universe!
অতিরিক্ত গাঁজা খেলে এরকম লেখা বেরোয়। নিজগুনে ক্ষমা করে দেবেন প্লিজ।