১৮ বছরের উর্ধে ছাড়া পড়বেন না।
অভিষিক্তার মিসকল টা দেখেছে অভ্রনীল। কিন্তু কলব্যাক করে নি। করবেও না। কী হবে করে? যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। বার বার করে বলেছিল অভ্র। তোর অফিস তোকে এক্সপ্লয়েট করছে। তুই ওদের বল। এতদিন কাজ করার পরেও কেন এরকম মাইনে দেবে? দরকার হলে ছেড়ে দে কাজ টা।
অভিষিক্তা বলেছিল, “কেন? ছাড়ব কেন? ছাড়লে এক্ষুনি কে কাজ দেবে আমাকে!”
অভ্রনীল বলেছিল, “কী হবে ক’টা দিন কাজ না করলে? এভাবে তোকে এক্সপ্লয়েট করা হবে কেন? আমার ব্যাপার টা পোষাচ্ছে না!”
– আমার তো চাপ হচ্ছে না! তাহলে কেন তুই এরকম করছিস?
– করছি কারন তুই নিজের ভালো টা নিজে বুঝতে পারছিস না তাই!
– তুই একটু আমার ব্যাপার টা আমায় বুঝতে দে না প্লিজ।
অভ্রনীলের ঝোঁকের বসে উলটোপালটা কাজ করে ফেলার নিদর্শন রয়েছে অনেক। সেদিনও সে সেরকম একটা কাজই করে ফেলেছিল! ও বলেছিল, “তুই হয় এই কাজটা ছাড়! না হয় আমাকে ছাড়!”
“মানে? তুই আমাকে চয়েস দিচ্ছিস? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল অভিষিক্তা
অভ্রনীল বলেছিল, “হ্যাঁ। দিচ্ছি!”
অভিষিক্তা আরও কয়েকবার চেষ্টা করেছিল। সব ঠিক করার। কিন্তু…
কলিং বেলের আওয়াজে সম্বিৎ ফিরল অভ্রর। সৃজিতা কী এসে গেল? আয়নায় নিজেকে একবার দেখে নিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেল ও।
দরজা খুলতে দেখল সৃজিতা দাঁড়িয়ে। কাঁধে একটা ব্যাগ। পরনে জিন্স আর কূর্তি। অভ্রর চোখটা চলে গিয়েছিল ভুল জায়গায়। আসলে এই মেয়েটার শরীর টা জাস্ট তাকিয়ে থাকার মতই!
সৃজিতা বলল, “কী গো? ভেতরে ডাকবে না?”
অভ্রনীল হেসে বলল, “আরে হ্যাঁ! আয় আয়! সরি!”
সৃজিতা ভেতরে এল।
“বাড়িটা খুঁজে পেতে অসুবিধে হয় নি তো?” জিজ্ঞেস করল অভ্রনীল।
সৃজিতা বলল, “একদম না। গুগল ম্যাপ দেখে এলাম। তোমার ঘর কোনটা?”
“ওই তো! আয়!।” নিজের বেডরুমের দিকে যেতে যেতে ডাকল অভ্রনীল।
সৃজিতা ওর বেডরুমে গিয়ে ব্যাগ টা রাখল বিছানার পাশে। তারপর উঠে বসল বিছানায়!
বলল, “বলো তোমার কী খবর!”
কী খবর বলবে অভ্র? সব ঠিক আছে? নাকি সব ভুল আছে? কোনটা বলা ঠিক হবে ওর।
অভ্র বলল, “খবর ভালোই। এই তুই বিরিয়ানি খাস?”
সৃজিতা বলল, “নিশ্চয়। বিরিয়ানি খায় না এরকম মানুষ আছে নাকি?”
অভ্র হাসল।
সৃজিতা বলল, “অভ্রদা আমি একটু চেঞ্জ করে নিই?”
অভ্র বলল, “হ্যাঁ। করে নে। আমি বাইরে যাচ্ছি!”
সৃজিতা বলল, “ওমা! কি সুইট!”
অভ্র অবাক হয়ে বলল, “এতে সুইটের কী হল?”
সৃজিতা বলল, “কিছু না যাও! তুমি বাইরে যাও!”
অভ্র বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। সৃজিতা বন্ধ করে দিল দরজা। অভিষিক্তার সাথে সবটা কেমন যেন নরম্যাল হয়ে গিয়েছিল। দু’জনেই দু’জনের সামনে চেঞ্জ করছে। দরজা খুলে হিসু করছে! কিচ্ছু মনে হত না! সবটাই একটা অভ্যাস! প্রত্যেক মুহুর্তে যেন সেই অভ্যেস টা ফিরে পেতে ইচ্ছে করছে। বার বার মনে হচ্ছে ফোনটা হাতে নিয়ে করে ফেলুক ফোন। চেঁচিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে, “তুই আমার! কোথাও যাবি না তুই আমাকে ছেড়ে! যেতে পারিস না তুই!”
কিন্তু সেটাই বা করতে পারছে কই!
“এই যে! এসো! কী ভাবছো এত?”
কখন যে সৃজিতা দরজা খুলেছে ও খেয়ালই করেনি। পেছন ফিরতেই হঠাৎ একটা ঝটকা লাগল ওর। সৃজিতা একটা টিশার্ট পরেছে। ভি নেক। কিন্তু ভেতরে কী কিছু পরে নি? এরকম লাগছে কেন!
চট করে চোখ টা সরিয়ে নিল অভ্র। এরকম সেক্সুয়ালি ফ্রাস্ট্রেটেড ছেলেদের মত হয়ে যাচ্ছে কেন ও দিন কে দিন! সৃজিতা গিয়ে বসল বিছানায়! ওর হঠাৎই মনে হল সৃজিতা কী কিছু হিন্ট দিতে চাইছে ওকে? তাহলে কী ও আলমারি থেকে বের করে নেবে ওটা। এক্ষুনি কী ও কিছু করুক সেটা চাইছে অভ্র।
কাঁপা কাঁপা পায়ে অভ্র এগিয়ে গেল সৃজিতার দিকে। সৃজিতা কেমন একটা মোহময়ী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। ও কাছে গিয়ে বাঁ হাত দিয়ে সৃজিতার গালটা ধরল। তারপর নিজের ঠোঁট টা এগিয়ে নিয়ে গেল ওর ঠোঁটের কাছে। সৃজিতা বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করল না। কিন্তু দু’টো ঠোঁট পরস্পর কে ছোঁয়া মাত্র যেন শক খেল অভ্রনীল। বিদ্যুৎবেগে সরিয়ে নিল নিজেকে!
কী করছে ও এসব? কেন করছে? এগুলো করে কী পাবে ও? শান্তি পাবে? নাকি শাস্তি দিতে চায় অভিষিক্তা কে?
পরক্ষনেই ওর খেয়াল হল তাই তো! শাস্তিই তো দেবে ও। সব কিছু রেকর্ড করে পাঠাবে অভিষিক্তা কে! ওর অভ্র অন্য কারুর সাথে শুচ্ছে দেখলে তবেই শাস্তি পাবে অভিষিক্তা।
কথাটা মনে হতেই আলমারি থেকে কন্ডোম টা বের করতে গেল অভ্রনীল। এতক্ষন সৃজিতা কিছু বলেনি। আলমারি টা খুলতেই, সে বলে উঠল, “কন্ডোম টা বরং এখন থাক অভ্র দা। তোমার ব্রেক আপ কীভাবে হল সেটা বলবে কী?”
চমকে উঠল অভ্রনীল। আলমারির পাল্লাটা বন্ধ করে বলল, “মানে? তুই কী করে জানলি?”
সৃজিতা বলল, “তোমার আজ মেসেজ দেখেই বুঝেছিলাম! আমার এসব অভ্যেস আছে। নিজেদের গার্লফ্রেন্ডদের ওপর রিভেঞ্জ নিতে চাইলেই ছেলেরা আমায় এভাবেই ডাকে।”
মানে? কী বলতে চাইছে কী সৃজিতা?
সৃজিতা না থেমে আরও বলল, “তবে তোমার থেমে যাওয়া দেখে ভালো লাগল। ছেলেরা সাধারনত থামে না জানো তো!।”
অভ্র কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, “তুই থামাস না কেন?”
সৃজিতা হেসে বলল, “আমি থামাবো কেন? ১১ বছর বয়সে যখন মেসোমশাই কে থামাতে পারিনি তখন এখন আর থামিয়ে কী লাভ? আমার তো ভালোই লাগে! এই সো কল্ড সম্পর্কগুলোর কফিনে শেষ পেরেক মারতে সাহায্য করি আমিই!”
অভ্র উত্তর দেওয়ার আগেই ফোনটা বেজে উঠল ওর! অভিষিক্তা ফোন করছে!
কী করবে ও? ধরবে?
এসব ভাবতে ভাবতেই ফোনটা ধরে কানে দিল অভ্র। আশ্চর্য! ও প্রান্ত থেকে একটা ছেলের গলা!
“হ্যালো হ্যালো!” ছেলেটি হাঁফাচ্ছে মনে হল!
“কে?” অভ্রনীল অবাক গলায় প্রশ্ন করল!
“হ্যালো… অভ্র? একবার আসতে পারবে প্লিজ? অভিষিক্তার একটা… মানে… ও কথা বলছে না! আপনার বাড়ির কাছেই আছি… আসলে এই গলির মধ্যে বাইক থেকে… মানে… হ্যালো!”
মাথাটা ঘুরে গেল অভ্রর।