– কেএফসির স্মোকি চিকেন খুব প্রিয় না?
– Who is this?
– আচ্ছা আপনি স্মোক করেন?
– আরে কে আপনি? অচেনা নাম্বার থেকে মেসেজ করলে আগে নিজের পরিচয় দিতে হয় জানেন না?
– আমার নাম অচেনা রায়। আপনি অভিজিৎ তো? ট্রুকলার এ তাই দেখালো।
– আপনার নাম অচেনা?
– হ্যাঁ কেন? আপত্তি আছে?
– নাহ। আপত্তি কেন থাকবে? কি চাইছেন একটু বলবেন? আর আমার নাম্বার পেলেন কীভাবে?
– কিছু চাইছি না। আপনি স্মোকি চিকেন ভালোবাসেন কিনা সেটাই বোঝার চেষ্টা করছি।
– হ্যাঁ বাসি। খুব ভালোবাসি। আমার নাম্বার কোত্থেকে পেলেন?
– কেএফসি থেকে!
– কেএফসি আজকাল লোকজনের নাম্বারও দিচ্ছে নাকি?
– হ্যাঁ রান্না করা চিকেনের সাথে সাথে লোকজন কে মুরগী করতে হলেও কেএফসি হেল্প করে।
– দেখুন আমি তো আপনাকে চিনি না। তাই বেশী কথা বলতে পারছি না। বাই।
– বাবাহ! একটা মেয়ে আপনাকে মেসেজ করলো আর আপনি এরকম ঢং করছেন কেন? বং গাই কে বলব? ঢং করো তুমি ঢং?
– আপনি যে মেয়ে সেটা যদি Surely জানা যেতো তাহলে তো ঢং করতাম না। আমার বন্ধুগুলো যা একখানা জিনিস। তারাই হয়তো নতুন সিম নিয়ে ঝাঁট জ্বালাচ্ছে। কে তুই বল না।
– আরে মশাই আমি সত্যিই মেয়ে। বিশ্বাস করুন।
– প্রমান দিন। এমন কিছুর ফটো পাঠান যেটা শুধু আপনারই আছে।
– ইসস! নোংরামো টা ভবিষ্যতের জন্য তুলে রাখুন না।
– আরে ধুর! নোংরামো কে করলো। আপনি আপনার ডান হাতের কড়ে আঙুলের ফটো পাঠান নেল পলিশ আছে কিনা দেখবো। অথবা চোখ এর ফটো পাঠান আপনার। তাহলেই হবে।
– ফটো পাঠানো হবে। এক্ষুনি এত তাড়া কীসের?
– এই দেখলেন তো? আপনি নাম্বার কীভাবে পেয়েছেন বলবেন না। আপনি ফটো পাঠাবেন না। তাহলে আর কথা বলতে পারছি না। Sorry.
– আচ্ছা নাম্বার কীভাবে পেয়েছি বলছি।
– বলুন।
– আপনি কাল কেএফসি গিয়েছিলেন তো?
– হ্যাঁ। কেন?
– কাল যখন বিলিং এর সময় আপনি আপনার ফোন নাম্বার বলছিলেন ওদের, তখনই শুনলাম আমি। আমি আপনার ঠিক পরেই ছিলাম। আপনি বোধহয় খেয়াল করেন নি।
– ওহ! আচ্ছা। ওখানে একবার নাম্বার শুনে আপনি মুখস্থ করে নিলেন? বলেন কী? মারাত্মক স্মৃতিশক্তি তো আপনার! তা আপনি কি সব ছেলেকেই এভাবে নাম্বার শুনে নিয়ে মেসেজ করেন?
– একেবারেই না। আপনি স্পেশাল মুরগী।
– বুঝলাম। ঠিক আছে দিদি। এবার টাটা। অনেক গল্প হল। কিন্তু এবার অফিস বেরোতে হবে আমাকে।
– হ্যাঁ। আপনি টাইমস অফ ইন্ডিয়া তে কাজ করেন তো?
– এই রে! এটা আবার কে বলল? কেএফসি আমার নাম্বার থেকে এত তথ্য বার করে নিচ্ছে নাকি?
– অফিস ক’টায় ছুটি?
– ৭ টায়। কেন?
– তারপর কোথায় যাবেন?
– এতো আশ্চর্য ব্যাপার? সেটা আপনাকে কেন বলব?
– ক’দিন পরে তো বলতে হবেই। সেই জন্যেই আর কি।
– মানে?
– মানে আপনার একটা বোকা গাধার চশমা আছে দেখলাম। ওটা সবসময় পরবেন না। কাল যেটা পরেছিলেন রিমলেস। ওটাই পরবেন। ওটা পরলে বেটার লাগে।
– আরে আপনি কোত্থেকে এসব বলছেন বলুন তো?
– বাড়ি থেকেই।
– ধুর মশাই। এবার বোরিং লাগছে। আমি গেলাম।
– স্নান করবেন তো?
– হ্যাঁ।
– ভিডিও কল করব?
– আমি স্নান করব? আপনি ভিডিও কল করবেন? কোন দুঃখে?
– আপনার ইয়েটা দেখব…মানে বডিটা।
– নাহ। হবে না।
– যদি চোখের ফটো পাঠাই তাহলে দেখতে দেবেন?
– ভেবে দেখতে পারি। ঠিক আছে ওয়েট। পাঠাচ্ছি।
… [একটু পর] …
– পেলেন?
– হুম পেলাম। এটা আপনার চোখ?
– আর কার চোখ আমি এক্ষুনি আপনাকে পাঠাতে পারবো বলে মনে হয় আপনার?
– না মানে… বিশ্বাস হচ্ছে না। বলিউড অ্যাকট্রেসদের কারুর চোখ পাঠান নি তো? ক্রপ করে?
– আচ্ছা শুনুন। এই যে আপনি তখন থেকে একটা অচেনা মেয়ের সাথে গল্প করছেন আপনার গার্লফ্রেন্ড জানে?
– নাহ। জানেনা। সব কথা কাল্পনিক গার্লফ্রেন্ডকে জানাতে নেই।
– প্রেম করেন না? যাহ!
– একটা সময় করেছি। এখন আর করি না।
– কেন?
– ব্রেক আপ হয়ে গেছে। ২ বছর হয়ে গেল।
– বাহ! তাহলে এই মুহুর্তে আপনার হাতের পেশীগুলো বেশ শক্ত তাই তো?
– What?
– কিছু না। ছাড়ুন। আপনি একটা গোবর-গনেশ।
– আচ্ছা তাই। এবার আমি যাই?
– ভিডিও কল করবেন তো?
– ব্যাপার টা কী ঠিক হবে?
– দেখুন ক’দিন পর আপনি হ্যাঁ বললে এমনিতেও আমাকে সব দেখতে হবে। তাই আগে ভাগে সব দেখে রাখতে চাইছিলাম আর কি।
– আমি হ্যাঁ বললে মানে?
– আপনার কাছে আপনার মা একটা ফটো নিয়ে যাবে। আমার ফটো। আমায় পছন্দ হলে হ্যাঁ বলে দেবেন।
– মানে? আমার মা? আপনাকে কীভাবে চিনবে?
– চিনবে না। চেনেন। আপনার ফটো দেখলাম কয়েকদিন আগে। এক কাকু দেখালেন। একটু ক্যাবলা মনে হল। কিন্তু আমি কাজ চালিয়ে নেবো ওই দিয়েই।
– এক সেকেন্ড এক সেকেন্ড! আপনি প্রজ্ঞাপারমিতা?
– হ্যাঁ। তবে মিতিন মাসি নই।
– আরে আমি শুনলাম একজন কে আমার ফটো দেখানো হয়েছে। কিন্তু আমাকে দেখানো হয় নি।
– জানি। কাল আপনাকে কেএফসি তে দেখে ভাবলাম সব কথাবার্তা ফাইনাল হওয়ার আগে একটু বাজিয়ে দেখা যাক!
– কি বুঝলেন? বাজিয়ে?
– সেসব পরে বলব। যান আগে স্নান করে নিন। অফিস যেতে হবে তো!
– ও হ্যাঁ করব?
– কী করবেন?
– ভিডিও কল?
– নাহ। একটু বেশি ফার্স্ট ফরওয়ার্ড হয়ে যাবে ওটা। ক’দিন পরে সামনা সামনিই দেখবো।
– আচ্ছা বেশ। কিন্তু আমি তো আপনাকে দেখলাম না। আমার যদি অপছন্দ হয় দেখার পর?
– তাহলে আর কি? আমি আপনার বাড়ির নীচে ধর্না দেবো। অনশন করবো।
– বাপরে! আপনি মানুষ না পিসি?
– আমি পিসি। প্রজ্ঞাপারমিতা চক্রবর্তী। এনিওয়ে ফটো পাঠাচ্ছি দেখে নিন। পছন্দ না হলে বলবেন স্নান করে ধর্না দিতে বেরোবো।
– আর পছন্দ হলে?
– পছন্দ হলে অফিস সেরে বেরিয়ে কেফসির সামনে চলে আসুন। স্মোকি চিকেন ডিনার করব!
– Lovely! <3