– এই যে ম্যাডাম… হ্যালো?

– আমি?

– হ্যাঁ।  আপনি না তো কে?

– কী ব্যাপার বলুন?

– কনুই মারলেন কেন?

– What? আমি? কাকে?

– আমার পাশের বাড়ির দাদাকে মারলে নিশ্চয় আমি বলতে আসবো না। তাই না? আমাকে আমাকে।

– কখন কনুই মারলাম?

– এইমাত্র। মেট্রো তে ওঠার সময়ই তো মারলেন। মেরে চলে গেলেন লেডি সীটের দিকে।

– আমার খেয়াল নেই। ভুল করে হয়ে গেছে তাহলে! সরি। কিছু মনে করবেন না।

– যত্তসব!

– আরে বললাম তো সরি।

– একটা ছেলে এই ভুল করে করলে সরি টা মেনে নিতেন তো?

– ছেলেরা অনেক বেশী অসভ্যতামো করে। সেই জন্যেই বিশ্বাস করাটা একটু কঠিন হয়।

– থাক। কাটিয়ে দিন। সব ব্যাপারেই ছেলেদের ব্লেম করা আপনাদের স্বভাব।

– আচ্ছা বেশ!

– কি আচ্ছা বেশ?

– আর বকতে ভালো লাগছে না।

– সেই সেই। এখন তো বলবেন এরকম।

(মেট্রো থেকে নেমে যায়)

(একটু পর)

– এক্সকিউজ মি?

– একী? আপনি আবার পেছন পেছন চলে এসেছেন রাস্তা অবধি?

– আমার..

– কি ভেবেছেন কী বলুন তো? আপনি কনুই মারবেন। আর এখন আমাকে সরি বলতে হবে তাই তো? নাহলে লোক জড়ো করবেন চেঁচিয়ে তাই না?

– আরে…

– আপনারা মেয়েরা সবাই একরকম। আর পারছিনা আপনার সাথে ডিল করতে। বলুন পা ধরে ক্ষমাই চাইব? নাকি কান ধরব?

– কানই ধরুন।

– সিরিয়াসলি?

– চেঁচাবো কী?

– ঠিক আছে। ধরছি। সরি।

– এক মিনিট। এটার ভিডিও করে রাখি একটা।

– মানে? এসব কী?

– চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকুন।…  হ্যাঁ ঠিক আছে এবার!

– এবার যাই?

– হ্যাঁ। নিশ্চয় যাবেন। এটা নিয়ে যান। আপনার মানিব্যাগটা।

– আরেহ! এটা কোথায় পেলেন?

– আপনি মেট্রো থেকে বেরোনোর সময় পড়ে গিয়েছিল এটা দিতেই এলাম। তারপর আপনার পাগলামো দেখে ভাবলাম ব্যাপারটা এঞ্জয় করি!

মানে? আপনি আমাকে অকারণে কান ধরালেন?

– একেবারেই না। একটা বা দুটো মেয়েকে দেখে সব মেয়েদের জাজ করার অধিকার কে দিয়েছে আপনাকে? কে বলেছে আপনাকে যে আমরা শুধু ভিকটিম হওয়ার নাটক করি? আমাদের সাথে ট্রামে বাসে রোজ কী হয় জানেন?

– আমি ওরকম কিছু মিন করতে চাই নি।

– না চাইলেও ওটাই বলেছেন। যাই হোক বাদ দিন। এই কারণেই আপনাকে কানে ধরালাম। অপরাধের শাস্তি।

– এত অল্প শাস্তি?

– তবে আবার কী?

– না মানে আপনার সাথে এক কাপ কফি খেয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতেই পারি।

– আমি চা’টা বেশি প্রেফার করি। আর আমার এখন অফিস আছে। চলি। ওয়ালেট টা সাবধানে রাখুন।

(১ ঘন্টা পর)

– হ্যালো!

– হ্যাঁ? কে?

– আমি মেট্রোর ওই ছেলেটা বলছি।

– ওহ আচ্ছা। হ্যাঁ, মেট্রোর ওই ছেলেটা, বলুন!

– আপনি আমায় ভুল করে অন্য কারুর মানিব্যাগ দিয়ে গেছেন। ওতেই আপনার নাম্বার পেলাম।

– জানি।

– আর আমার মানিব্যাগটা?

– আমার কাছেই আছে। কলেজ স্ট্রীট চলে আসুন বিকেলে। চা খেয়ে প্রায়শ্চিত্ত করে মানিব্যাগটা ফেরত নিয়ে যাবেন।

– মানে? আপনি ইচ্ছে করে…

– বাংলা বোঝেন?

– হ্যাঁ।

– গুড। ৬ টায়। কলেজ স্ট্রীট… দেখা হচ্ছে।

দেখা হচ্ছে

Arnab Mondal


হিজিবিজি লেখা আর বিরিয়ানি নিয়ে Phd করছি আর আকাশবাণী কলকাতায় নিজের কন্ঠস্বর ভাড়া দিয়ে সংসার চালাচ্ছি।


Post navigation


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করবেন না দাদা/দিদি