– হাই জান
– আরে কি ব্যাপার? পড়িয়ে বেরিয়ে গেছিস?
– হ্যাঁ। এই তো বেরোলাম।
– বাবাহ! আজ তো তাড়াতাড়ি হয়ে গেল!
– হ্যাঁ। সামনে পরীক্ষা তো। নিজে পড়ুক এবার।
– ওহ। পরীক্ষা কী এগিয়ে গেল নাকি রে? দু’মাস বাদে ছিল না।
– হ্যাঁ। কিন্তু এখন বলছে ২ সপ্তাহ পরেই হবে। যাচ্ছেতাই হয়ে গেছে Education System টা।
– হুম। জানি… অটো নিবি তো এখন?
– হ্যাঁ রে নেবো। শোন না…
– হ্যাঁ বল।
– একটা ঘড়ির সেট দেখলাম জানিস। খুব সুন্দর। আমাজনে।
– তাই?
– হ্যাঁ। দু’টো ঘড়ি একসাথে। Couple দের জন্য। কিনবি?
– কত দাম?
– ১৪৯৯ বোধহয়। আমি হাফ দেবো চাপ নেই।
– আরে তোকে দিতে হবে না। আমিই দিতে পারি।
– না না। থাক ছেলেরা সব সময় কেন টাকা দেবে?
– আরে সব সময় কোথায়? আমরা তো শেয়ার করি।
– ভালো তো। তাহলে এটাও শেয়ার করবো।
– আচ্ছা করে দে অর্ডার।
– আচ্ছা। এই শোন না তোর কার্ড দিয়ে করছি। ক্যাশব্যাক দেবে বলছে SBI এর কার্ডে। পরে আমি ফোন পে দিয়ে পাঠিয়ে দেবো হাফ টাকা।
– হ্যাঁ কর। জানিস তো কার্ড ডিটেইলস।
– হ্যাঁ কার্ড নাম্বার টা তো সেভ করাই আছে। CVV টা আর Expiry Date টা ভুলে গেছি।
– তোকে বলি ওগুলো সব সেভ রাখতে। দাঁড়া পাঠাচ্ছি।
– আরে সেফ লাগেনা। মনে হয় ফোন টা হারালে যাবে সব!
– হুম দাঁড়া। পাঠাচ্ছি।
– আচ্ছা এখানেই পাঠা। মানে Whatsapp এ।
– হ্যাঁ রে। আবার কি!
– CVV – 381 আর Expiry 4/23
– হুম। আমি অটোয় উঠলাম। OTP গেলে পাঠিয়ে দিস।
– হ্যাঁ। পাঠিয়ে দেব।
[একটু পর]
– এই OTP হচ্ছে 759621.
– Thanks জান। আমি নামবো এবার। ফিরে জানাচ্ছি।
– হ্যাঁ। ঠিক আছে জানাস। আজ বড্ড বেশী নিজের ফোনে সেভ করা নাম দিয়ে ডাকছিস।
– হ্যাঁ। কেন? খারাপ লাগছে? বর কে নাম ধরে ডাকতে নেই জানিস না?
– সেই রে! তুই তো কত মানিস এসব!
– আরে! নাহ তাও।
– এই তোর ওই চাকরির খবর কিছু এল?
– নাহ রে। মনে হয় হবে না।
– আরে দাঁড়া দাঁড়া। ওরা তো বলেছে যেকোনোদিন চিঠি চলে আসবে। এত চাপ নিস না।
– হুমম।
[আর একটু পর। অচেনা নাম্বার থেকে ফোন]
– (কাঁপা গলায়) হ্যালো অভি?.
– হ্যাঁ কে?
– আমি… আমি বলছি…
– প্রিয়া? তুই? এটা কার নাম্বার?
– তুই কোথায় আছিস?
– আমি বাড়িতেই। এই তো কথা হল তোর সাথে? বাড়ি ফিরিস নি?
– আমার সাথে? মানে? কখন?
– এই তো ৫-৭ মিনিট হল। ঘড়ি টা অর্ডার করলি?
– কি? কী ঘড়ি? কীসব বলছিস? তুই একটু বাগবাজার থানায় আসতে পারবি?
– থানায়? এখন? কী হয়েছে? তুই বাড়ির কাছে নেমে আবার থানায় কেন গেলি?
– আমি? বাড়ির কাছে? ২ ঘন্টা ধরে বসে আছি থানায়। আমার ফোন টা চুরি হয়েছে পড়াতে যাওয়ার সময়। থানায় এসেছিলাম। এরা বসিয়ে রেখেছে রিপোর্ট না নিয়ে। আমি জানিনা কী করব? অনেক প্রাইভেট জিনিস আছে ফোনে?
– What? কী বলছিস? কখন হয়েছে? তাহলে আমার কাছ থেকে CVV নাম্বার চাইল কে? পেমেন্টের জন্যে?
– CVV নাম্বার? তোর? Oh my god! আরে আমি কেন CVV চাইব? আমার তো মুখস্থ আছে ওগুলো।কাকে দিলি তুই নাম্বার? টাকা আছে তো? তুই এক্ষুনি কার্ড ব্লক কর।
– তোর ফোন টা লক করে রাখিস না কেন? তুই নাকি পুলিশ হবি? আশ্চর্য! ধুর! সব গেল বোধহয়।
– মেসেজ আসেনি টাকা কাটার?
– নাহ। আমার আসেনা সব সময়। বাল এর ব্যাঙ্ক একটা।
– তুই প্লিজ থানায় আয়! আমি জানিনা আমাকে আর কতক্ষন থাকতে হবে।
– হ্যাঁ আসছি। ইসস! কী হয়ে গেল! আমার আগেই গেস করা উচিত ছিল। আমাকে জান বলে ডাকছিল।
– ওহ। হ্যাঁ। ওই নামে সেভ আছে তোর নাম্বার। আসল নাম্বার জানেনা বলেই বোধহয়। কে পেয়েছে জানিনা ফোন। আমি ফোন করলাম তুলল না। সুইচ অফ করে দিল তারপর।
– এই এই… মেসেজ ঢুকল…
– কী মেসেজ?
– SBI এর। দাঁড়া দেখি… OH MY GOD!!
– এই কী হল? কত টাকা? ৫৭ হাজার টাকা। যেটা ছিল পুরোটাই চলে গেল। হে ভগবান এবার আমি কী করব?
– I am sorry Avi. তুই প্লিজ আমায় ক্ষমা করিস। আমি ফোনে কার্ড নাম্বার টা না সেভ রাখলে…
– তুই ফোন টা লক রাখলে এত কিছু হত না। কেন? এতটা Careless কেন?
– আমি… মানে…
– সব শেষ হয়ে গেল। সব টা গেল। তুই দাঁড়া থানায়। আমি আসছি।
[আধঘন্টা পর]
– Excuse Me?
– কি চাই?
– ডায়রি করতে এসেছি।
– ভেতরে গিয়ে বসুন ওই চেয়ারে।
– আমার এক বন্ধুও এসেছে ও কি ভেতরে আছে?
– জানিনা। ওই চেয়ারে বসুন।
– কেউ নেই তো ওখানে?
– কেউ নেই যখন কেউ চলে আসবে। এত কথা বলবেন না। চুপ চাপ বসুন।
[মিনিট ২০ পর]
– দেখুন আপনারা কি কেউ আমার ডায়রি টা নেবেন? এভাবে কতক্ষন বসব?
– অফিসার নেই কেউ। আমরা কী করব?
– আর আমার বন্ধুও এসেছিল ওকে দেখেছেন কী?
– নাহ। কাউকে দেখিনি। চুপচাপ বসুন।
– আরে ধুর মশাই। আমার ৬০ হাজার টাকা চলে গেছে। আমার বন্ধুর ফোন চুরি হয়েছে। আর আপনারা ইয়ার্কি মারছেন নাকি? আপনাদের থানায় আপনি ছাড়া আর কেউ নেই নাকি?
[হঠাৎ খুব চেনা গলার আওয়াজ]
– একদমই ইয়ার্কি মারছি না। ইন ফ্যাক্ট কাজের ব্যাপারে খুব সিরিয়াস আমরা।
– তু-তু-তুই??? পুলিশের ইউনিফর্মে কেন? এই এই? এসব কী?
– ওহ তোকে বলা হয় নি। চাকরির চিঠি এসেছে এক সপ্তাহ আগে।
– What? বলিস নি কেন? আর টাকা? আমার টাকা?
– ওটা তো প্র্যাংক করলাম।
– মানে? কেন?
– ২ টো কারনে. একটা তো অবশ্যই Surprise দেব ভাবলাম। আর একটা?
– আর একটা হল এটা করব বলে…
এরপর থানার মধ্যে প্রিয়া এক হাঁটু গেড়ে বসল। তারপর বলল, “চাকরি টা আমি পেয়ে গেছি অভি শুনছো? এখন আর কেউ আটকাতে পারবে না। সম্বন্ধ টা এইবার তুমি ভেস্তে দিতে পারো। মাকে বলে দাও বিয়ে তুমি করছ না।”
– আরে আরে একি? কী করছিস?
– তাড়াতাড়ি হ্যাঁ বল বাল। একজনও সিনিয়র অফিসার নেই তাই এটা করতে পারছি। তাও দুলাল দা কে হাত করে।
– মানে… ইয়ে… আমি… মানে…
– বিয়ে করবি কিনা বল না হারামজাদা?
– হ্যাঁ হ্যাঁ। করব করব। নিশ্চয় করব।
– তাহলে তিন বার বল। কবুল হ্যা? কবুল হ্যা? কবুল হ্যা?
– ভাগ শালা। -_-
– – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – – –
এই অধমের বই ‘সেদিন চৈত্র মাস এবং অন্যান্য গল্প’ কিনে সমাজসেবা করতে হলে এখানে ক্লিক করুন – https://boighar.in/product/sedin-chaitramas-o-onyanyo-galpo/
বই সরাসরি আমার কাছ থেকে নিতে হলে এই ফর্ম টা ফিল আপ করে দিন – https://goo.gl/forms/veaiEjFjIl4pxYXL2