৩
ওপরের ফ্লোরে উঠে শারদ্বত একটা ঘরের দরজায় গিয়ে টোকা মারল বার কয়েক। কিছুক্ষন পর একটা বেঁটে মত লোক এসে খুলে দিল দরজা। তারপর শারদ্বত কে বলল, “আরে স্যার। আসুন আসুন। আপনার জন্যেই সবাইকে নিয়ে এসচি।”
শারদ্বত আমাকে ইশারা করল ভেতরে আসার জন্য। গেলাম ওর পেছন পেছন। ভেতরে গিয়ে ২ টো চেয়ারে বসলাম আমরা। ঘরের মধ্যে রয়েছেন ৩ জন। একজন কম বয়সী মহিলা। মাথা নীচু করে বসে আছে। আর একজন চশমা পরে সন্দেহজনক ভাবে আমাদের দিকে তাকিয়ে। আর ওই বেঁটে মতন লোকটি। যে দরজা খুলে দিল আমাদের। সে এমন ভাবে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের পাশে যেন আমাদের হুকুমের অপেক্ষায় রয়েছে। শারদ্বত তাকে বলল, “নিমাই বাবু, প্রথমে আপনার সাথে কথা বলব। বাকিদের একটু বাইরে করিডরে অপেক্ষা করতে বলুন।”
নিমাই বাবু নামের লোকটিকে আর কিছু বলতে হল না। বাকি দু’জন বিছানা থেকে উঠে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে। বেরোবার ঠিক আগে শারদ্বত বলল, “ও… ইয়ে…
ফিরে তাকালো দু’জনেই। “কাছাকাছিই থাকবেন। কোথাও যাবেন না। আর দরজাটা বন্ধ করে দিন” , বলল শারদ্বত।
নিমাইবাবু এবার আমাদের সামনে এসে বসলেন বিছানায়। বললেন, “বলুন স্যার। কী জিজ্ঞাসা করবেন করুন।”
শারদ্বত পকেট থেকে সিগারেট টা বার করে বলল, “সে করছি। তার আগে পুরো কেস টা আর একবার বলুন তো। অনিরুদ্ধ জানেনা এখনও কিছু।”
কথাটা বলে আমাকে আর নিমাইবাবুকে সিগারেট অফার করল ও। আমি না বললাম। নিমাইবাবু একটা নিয়ে পকেটে রেখে দিলেন।
শারদ্বত ভুরু কুঁচকে বলল, “সিগারেট খাও না?”
আমি বললাম, “কিছুই খাই না! তুমি আমার নাম জানলে কীভাবে? আমি তো বলিনি!”
– ভাত, রুটি?
– ওগুলো খাই।
– তাহলে কিছুই খাই না বললে কেন?
– মানে… নেশার জিনিস কিছু খাই না। নামটা কীভাবে জানলে সেটা বলো না।
– নেশা? কে বলে নেশা?
আমি আর কিছু বললাম না। এ উত্তর দেবে না আমার প্রশ্নের। নিমাইবাবুর দিকে ফিরে বললাম, “হ্যাঁ। আপনি বলুন।”
বলে তো দিলাম। কী বলবে, কেন বলবে কিছুই তো জানিনা ছাই! আর আমিই বা এখানে কী করছি সেটাই জানিনা! এই শারদ্বত ছেলেটা বড় অদ্ভুত। একি তবে প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর? মানে গোয়েন্দা নাকি? রিয়েল লাইফ গোয়েন্দা? বাবাহ! এরাও মার্কেটে টিকে আছে এখনও।
“অনিরুদ্ধ?” আবার আমার নাম ধরে ডাক শুনে সম্বিৎ ফিরল।
– হ্যাঁ বলো।
– কীসের এত চিন্তা তোমার? কেস টা শুনবে যে!
উফফ! এই ছেলেটা বড্ড ঘ্যানঘ্যান করে!
বললাম, “হ্যাঁ। শুনবো তো। নিমাইবাবু, বলুন।”
নিমাইবাবু বললেন, “আমরা তিনজনেই জাদুকর এ.সি. সরকারের জন্য কাজ করি। উনি খুব বিখ্যাত জাদুকর। বিভিন্ন জায়গায় শো করেন। আমরা সাথে থাকি। বহুদিন পর কলকাতায় এসেছিলাম শো করতে। আমাদের একটা খুব বিখ্যাত খেলা হচ্ছে বয়স কমানোর খেলা। দর্শক আসন থেকে একজন কে ডাকা হয়। তারপর একটা বক্সে ঢুকিয়ে তার বয়স ১০-১৫ বছর কমিয়ে দেওয়া হয়। এটাই হল খেলা টা।”
“আর ব্যাপার টা কীভাবে ঘটে সেটা বলুন।” শারদ্বত সিগারেটে টান দিতে দিতে জিজ্ঞেস করল।
নিমাইবাবু বললেন, “আমাদের আগে থেকেই ঠিক করে রাখা হয় কাকে ডাকা হবে স্টেজে। সেই অনুযায়ী আমরা একটা বাচ্চা মেয়ে বা ছেলেকে যোগাড় করি।”
আমি বললাম, “এক সেকেন্ড? নাম, পরিচয় কীভাবে জানেন?”
– আসলে স্যার আমাদের এখানে যারা টিকিট কাটে সবাই কেই নিজের যেকোনো একটা আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার দিতে হয়। আমরা বলি এটা Security র জন্যে। কিন্তু আসলে এটা পরিচয় বের করার জন্যে।
– ঠিক আছে। তারপর বলুন।
– তারপর স্টেজে ডেকে একটি বক্সের মধ্যে ঢুকতে বলা হয় ওই ছেলে বা মেয়েকে। ওই বক্সের নীচের দিকটা খোলা যায়। ওটা খুলে দিয়ে ওই মহিলাকে নীচ দিয়ে গ্রীনরুমের নিয়ে গিয়ে বসানো হয়। আর বাচ্চাটিকে ওপরে তোলা হয়। এর মধ্যেই ওই জাদুকর বাইরে কিছু কথা বলেন। এটা সেটা বলে সময় কাটান কিছুক্ষন। তারপর যখন বাক্সটা খোলা হয় তখন দেখা যায় ওখানে বাচ্চাটা রয়েছে। সেই বাচ্চাটাকে আগে থেকেই সব শিখিয়ে পড়িয়ে রাখা হয়। সে সেইমত সব উত্তর দেয়।
শারদ্বত বলল, “অর্থাৎ পিওর বুজরুকি যাকে বলে! তার ওপর আধার কার্ড থেকে মানুষের তথ্য বের করছেন। মানে Invasion of Privacy. আপনাদের তো গুনের শেষ নেই!”
নিমাইবাবু বললেন, “এগুলো স্যার আমাদের কোনো দোষ নেই। আমাদের বস সবটা হ্যান্ডেল করেন। অনেক ওপরমহল অবধি হাত আছে ওনার।”
শারদ্বত হেসে বলল, “তাই যদি আছে, তাহলে আপনি আমাকে ডাকলেন কেন? ওপরমহলে খবর দিলেন না কেন?”
“এটাও স্যার ওই বসের হুকুম” নিমাইবাবু বললেন, “তার কারণ বোধহয় এই সব আধার কার্ডের ব্যাপার স্যাপারে ওপরমহলের কেউ জড়িত জানতে পারলে তো খুব রিক্স হয়ে যাবে।”
আমি বললাম, “রিস্ক।”
নিমাইবাবু বললেন, “হ্যাঁ স্যার রিক্স। বোঝেনই তো।”
– সে আমি বুঝেছি। কিন্তু রিস্ক! রিক্স না।
– আজ্ঞে স্যার?
শারদ্বত আমাকে বলল, “ছেড়ে দাও। ওটা হওয়ার নয়।” তারপর নিমাইবাবু কে বলল, “আপনি বলতে থাকুন। তারপর কী হল?”
নিমাইবাবু আবার শুরু করলেন, “হ্যাঁ তো প্রত্যেকবার যেটা হয় শো শেষের পর ওই ভদ্রলোক বা ভদ্রমহিলা কে আমরা ছেড়ে দিই। যে যার নিজের মত বাড়ি চলে যান। সেদিনও আমাদের শো এর পর তাই হয়েছিল। ভদ্রমহিলাকে বলেছিলাম বাড়ি চলে যেতে। বা যদি চেনা কেউ ভেতরে থাকে তাহলে তার জন্য বাইরে অপেক্ষা করতে। তারপর থেকেই ঐ মহিলা কে পাওয়া যাচ্ছে না!”
আমি বললাম, “পাওয়া যাচ্ছে না মানে? মিসিং?”
শারদ্বত ভর্ৎসনার চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “পাওয়া যাচ্ছেনা মানে মিসিং হয় অনিরুদ্ধ। বেসিক ইংরেজী।”
উফফ! মাঝে মাঝে বড্ড চালিয়াৎ এর মত আচরন করে ছেলেটা। এর সাথে এক ফ্ল্যাটে। ভাবাই যাচ্ছেনা!
নিমাইবাবু বললেন, “হ্যাঁ স্যার। মিসিং। ওঁর স্বামী এসেছিলেন ওখানে। খুব হল্লা করলেন। স্যার পাত্তা দেন নি। তারপরের দিন সকালেই পুলিশ এসে স্যার কে তুলে নিয়ে যান। কিন্তু বিশ্বাস করুন স্যার ওরকম মানুষ না। একটু রগচটা। তাড়াতাড়ি রেগে যান। কিন্তু… মানে অকারনে একজন মহিলাকে উনি কেন কিডন্যাপ করবেন?”
শারদ্বত বলল, “এটা ঘটার পরের দিন সকালেই নিমাইবাবু আমাকে ফোন করেন।”
– হ্যাঁ। স্যার বলে দিয়েছিলেন আপনাকেই যেন ফোন করি।
শারদ্বত আমাকে বলল, “এবার guess করো। এই কেসের ইনভেস্টিগেটিং অফিসার কে?”
আমি বললাম, “আমার দাদা?”
– হ্যাঁ। সেই কারনেই থানায় যাওয়া। ওই জাদুকর ভদ্রলোকের সাথে একটু কথা বলতে পারলে ভালো হত। কিন্তু তোমার দাদা, প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর অ্যালাউ করবেন না জেলে।”
– হুম দাদা পছন্দ করে না প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর দের।
– ভাবছে ওনার ভাত মেরে দেব! পুলিশগুলোও সত্যি! পারে বটে!
নিমাই বাবু বললেন, “এবার স্যার আমরা কী করব? বস কে ছাড়া বাড়িও ফিরতে পারব না। হোটেলে রোজ রোজ এত টাকা করে গুনতে হচ্ছে!”
শারদ্বত জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা, এ.সি. সরকারের কোনো শত্রু রয়েছে?”
– দেখুন শত্রু তো এই লাইনে থাকবেই। Competition এর বাজার! জাদুকর জে.পি. নামে একজন আছে। তার সাথে স্যারের খুব রেষারেষি। আমরা যেখানে শো করব ওই সময়েই দু’দিনের তফাৎ – এ উনিও সেখানে শো ফেলেন নিজের।
– ওই মহিলা কে শেষ কে দ্যাখেন?
– বোধহয় আমিই। আমিই ওনাকে বললাম বাইরে অপেক্ষা করতে। তারপর আর কেউ দ্যাখেনি।
শারদ্বত কিছু একটা ভাবতে ভাবতে ঘাড় নাড়ল। তারপর বলল, “ঠিক আছে এবার আপনি বাইরে অপেক্ষা করুন। আর ওই ভদ্রমহিলা কে পাঠিয়ে দিন।”
নিমাইবাবু বললেন, “স্যার ও বাংলাটা ঠিকমত বলতে পারে না। মানে মোটামুটি পারে। বোঝে সবই। কিন্তু বলার সময় একটু আটকে আটকে যায়। আমি কি থাকব এখানে? মানে… কিছু বুঝতে না পারলে… বলে দিতাম”
শারদ্বত বলল, “না না। আপনি বাইরেই দাঁড়ান। আমরা কাজ চালিয়ে নেবো।”
নিমাইবাবু ব্যাপার টাতে একটু যেন ক্ষুন্ন হলেন মনে হল। তবে শারদ্বত তাতে পাত্তা দিল না। নিমাইবাবু বেরিয়ে যাওয়ার পর ঢুকলেন ওই মহিলা। বয়স বেশী না। ২০ থেকে ২২ এর আশেপাশে। বেশ সুন্দরী। তবে মাথাটা নীচু করে আছে। ভয় পাচ্ছে নাকি?
শারদ্বত বললো, “আপনার নাম?”
মেয়েটি বলল, “শ্রদ্ধা।”
– কতদিন কাজ করছেন এই অখিলেশবাবুর হয়ে?
কথাটা শুনে বুঝলাম জাদুকর এ.সি. সরকারের আসল নাম অখিলেশ। এটা জানতাম না আমি।
শ্রদ্ধা বলল, “এই তো এক বছরের একটু বেশী হবে।”
– আপনার কাজ কী ছিল?
– আমি তো স্যারের অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিলাম। স্টেজপে উনকো হেল্প করতি থি।
– কেমন মানুষ ছিলেন আপনাদের স্যার?
– ভালো।
শারদ্বত গলা নামিয়ে বলল, “শুনুন। আপনাকে ভয় পেতে হবে না। আপনি যেটা সত্যি সেটাই বলুন। কেউ জানবেনা।”
মেয়েটি কি বুঝল জানিনা। বলল, “আচ্ছা হি তো থে। ঠিক টাইমপে টাকা দিতেন। তবে একটু রাগী ছিলেন। একটুতেই রেগে যেতেন।”
– গায়ে হাত তুলেছে কখনও?
– নেহি। কভি নেহি।
– সেদিনের ওই যে মহিলা কি যেন নাম ওনার?
– সুনন্দিতা চক্রবর্তী।
– হ্যাঁ, তা ওঁর সাথে আপনার শেষ কখন দেখা হয়?
শ্রদ্ধা বলল, “ম্যানে হি তো উসকো আখরিবার দেখি থি।”
শারদ্বতর ভুরুটা দেখলাম কুঁচকে গিয়েছে। এই তো নিমাই বাবু বলে গেলেন উনি নাকি শেষবার দেখেছেন ওই মহিলা কে।
শারদ্বত বলল, “তাই? কী করছিলেন তখন উনি?”
শ্রদ্ধা বলল, “ও মুঝসে পুছ রাহি থি কি বাথরুমটা কোন দিকে? আমি দেখিয়ে দিলাম। উনি চলে গেলেন।”
– এটা আপনি পুলিশ কে বলেননি?
– হ্যাঁ বলেছি তো!
– ওই অডিটোরিয়ামে কোথায় ছিল বাথরুম টা?
– ওখানে তো দোঠো বাথরুম থা। আচ্ছাওয়ালা স্যার কে গ্রীনরুম পে থা। আমি ওখানেই যেতে বললাম ম্যাম কে।
– তার মানে আপনি শেষবার দেখেননি ওনাকে।
– জি?
শারদ্বত আমাকে বলল, “তাহলে কেস টা যেটা দাঁড়ালো, অখিলেশবাবুর সাথে একবার দেখা করতে হবেই। কারন সুনন্দিতা চক্রবর্তী কে শেষ দেখেছিলেন উনিই।”
আমি ঘাড় নাড়লাম। শারদ্বত মেয়েটিকে বলল, “ঠিক আছে। আপনি ম্যানেজারবাবু কে পাঠিয়ে দিন।”
শ্রদ্ধা বিছানা থেকে উঠে এগোলো দরজার দিকে।
শারদ্বত বলল, “আপনি বাংলা লিখতে বা পড়তে জানেন নাকি?”
শ্রদ্ধা বলল, “নেহি সাহাব। শিখে নেবো। স্যার বলেছে শিখিয়ে দেবে।”
শারদ্বত বলল, “বেশ। আপনি ম্যানেজারবাবু কে ডেকে দিন একটু।”
কয়েক সেকেন্ড পরেই ঘরে ঢুকলেন সেই ম্যানেজার ভদ্রলোক। এখনও চোখের চাউনি তে সন্দেহ স্পষ্ট। শারদ্বত বলল, “আপনার নাম টা জানা হয়নি।”
“রঞ্জন মল্লিক” বিছানায় বসতে বসতে ভদ্রলোকের সংক্ষিপ্ত উত্তর।
শারদ্বত বলল, “এবার বলুন। ওই সুনন্দিতা মহিলা কে কী আপনিও শেষ দেখেছিলেন?”
ভদ্রলোক বললেন, “আমি কিছু দেখিনি।”
শারদ্বত বলল, “ম্যাজিক দেখছিলেন তো স্টেজে?”
ভদ্রলোক আবার বললেন, “আমি কিছু দেখিনি।”
আমি শারদ্বতর মুখের দিকে তাকালাম। ও দেখলাম অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে আছে রঞ্জনবাবুর দিকে। কয়েক মুহুর্ত থেমে শারদ্বত বলল, “দেখতে পান তো? চোখ গুলো Functional?”
রঞ্জন মল্লিক বললেন, “আমি কিছু দেখিনি। আমি কিছু জানিনা।”
এতো মহা জ্বালা। টেপ রেকর্ডারের মত এক কথা বলে যাচ্ছে!
শারদ্বত বলল, “সুনন্দিতা চক্রবর্তীর বাড়ির ঠিকানাটা দিন। ওগুলো আপনিই হ্যান্ডেল করেন তো।”
রঞ্জনবাবু বললেন, “আমি কিছু…
শারদ্বত ওনাকে কথা শেষ না করতে দিয়েই বলল, “জানেন না। বুঝে গেছি।” তারপর জোরে চেঁচিয়ে ডাকল, “নিমাইবাবু?”
একবার ডাকতেই দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে এলেন নিমাইবাবু।
এদিকে তখন বিছানার ওপর বসে রঞ্জন মল্লিক ক্রমাগত বলে চলেছেন। “আমি কিছু দেখিনি। আমি কিছু জানিনা।”
এক কথা। বার বার। গলার আওয়াজ টা আস্তে আস্তে কমছে। স্পষ্ট কথাগুলো বিড়বিড় শোনাচ্ছে।
শারদ্বত বলল, “আপনাদের ম্যানেজার কী পাগল? এক কথা বার বার বলে যাচ্ছে।”
নিমাইবাবু এবার বললেন, “রঞ্জু দা? ও রঞ্জু দা? কী হল তোমার?”
ভদ্রলোক দেখলাম কোনো কথার উত্তর দিলেন। শারদ্বত হঠাৎ করে বিছানা থেকে উঠে বলল, “নিমাইবাবু ওনার বোধহয় স্ট্রোক হচ্ছে। কিংবা মাথা ঘুরছে। ডাক্তার ডাকুন। আর আমাকে আমার অ্যাডভান্স ফিস টা আর সুনন্দিতা চক্রবর্তীর ঠিকানা টা পাঠিয়ে দেবেন।”
তারপর আমার দিকে ফিরে বলল, “চলো অনিরুদ্ধ। একটু চিকেন রোল খেতে ইচ্ছে করছে হঠাৎ।”
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ ছেলে তো বদ্ধ পাগল! একজন বয়স্ক মানুষের শরীর খারাপ সেখান থেকে এমন ভাবে বেরিয়ে এল যেন কিছুই হয় নি। আবার তাদের সামনেই বলে চিকেন রোল খাবে। এর সাথে থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো মনে হচ্ছে! এর চেয়ে আমার হোটেলের ঘরই ভালো।
তুমিও কি ABP হয়ে গেলে???