–         ওই?

–         হুম?

–         ব্যস্ত আছিস?

–         নারে বল।

–         একটা… খুব অদ্ভুত কথা মাথায় আসছে।

–         কী কথা? কী হয়েছে?

–         কয়েকদিন ধরেই ভুলভাল কিছু ইচ্ছে হচ্ছে।

–         কী ইচ্ছে?

–         Um… না কিছু না। বাদ দে।

–         আরে বল…

–         না না। This was a bad idea. ছাড় ছাড়।

–         এই… ন্যাকামো করিস না তো! বল। কী হয়েছে? কী ইচ্ছে হচ্ছে?

–         আচ্ছা বলছি… প্লিজ আমায় জাজ করিস না।

–         আমি করি না কখনও তুই জানিস। বল এবার।

–         দেখ… কলেজের ফার্স্ট ইয়ার থেকেই তোর সাথে প্রেম হল… তারপর ৫ বছর টানা প্রেম। তারপর ব্রেক আপ… চাকরি পাওয়ার জন্য লড়াই… সব পেরিয়ে এসে এখন একটু শান্তি।

–         হ্যাঁ… তো?

–         আমার এখন বেশ কিছু জিনিস করতে ইচ্ছে করছে যেগুলো আমি কোনোদিন করার সুযোগ পাইনি কিংবা করার কথা ভাবিনি কখনও।

–         মানে? কী?

–         মানে… প্রেমের শুরুতে লোকজন যেমন প্রথম সব কিছুর এক্সপিরিয়েন্স পায়… মানে ধরো প্রথম হাত ধরা, প্রথম চুমু… প্রথম… কিন্তু ভবিষ্যতের কথা না ভেবে। কাল কী হবে না ভেবে আমি শুধু একটু enjoy করতে চাই।

–         বুঝলাম। মানে সোজা কথায় তুই মেয়েদের সাথে hook up চাস। প্রেম নয়। তাই তো?

–         বোধহয় তাই। আজকাল প্রচুর ডেটিং অ্যাপ বেরিয়েছে। ওখানে তো লোকজন এই জন্যেই অ্যাকাউন্ট খোলে তাই না? আমিও খুলেছি।

–         হুম। তা এসব কথা হঠাৎ আমায় কেন বলছিস?

–         কারন আমি বুঝতে পারছি না এগুলো ঠিক কিনা। আমি বুঝতে পারছি না এই ইচ্ছে গুলো হওয়ার অর্থ কী? এর মানে কী আমি খুব খারাপ ছেলে?

–         দেখ আমি শুরুতেই তোকে বললাম আমি judge করবো না। কাজেই তুই ভালো ছেলে না খারাপ ছেলে সেই ব্যাপারে আমি যেতেই চাইছি না। কিন্তু এই জিনিস টা প্রচন্ড নরম্যাল। in fact অনেকেরই এই ইচ্ছে টা হয়। আমারও হয়েছে। তোর সাথে ব্রেক আপ এর পর।

–         তুই কী করেছিস?

–         থাক না ওসব কথা।

–         খুব ব্যক্তিগত?

–         যে মানুষটার সাথে পাঁচ বছর প্রেম করলাম, তার কাছ থেকে আর ‘খুব ব্যক্তিগত’র দোহাই দিয়ে কোনো কথা লুকোনো টা খুব বাজে একটা excuse.

–         তাহলে বল না।

–         তখন আমার যা ইচ্ছে হয়েছে করেছি। লোকজনের সাথে ডেটে গিয়েছি। চুমু খেয়েছি। শুয়েছি।

–         হুম। বুঝলাম। and How did that feel?

–         To be very honest সেই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে দারুন লেগেছিল। কোনো পিছুটান নেই, কোনো ভবিষ্যতের চিন্তা নেই। জাস্ট দুর্দান্ত লেগেছিল।

–         বেশ। Thank you.

–         কীসের জন্যে?

–         এই যে… আমার ভেতরের দোটানা টা অনেকটা পরিস্কার করলি। আমি ভাবছিলাম এটা বোধহয় ভুল ইচ্ছে। এটা বোধহয় ঠিক হচ্ছে না এসব ভাবা।

–         এখনও শেষ হয় নি আমার বলা।

–         ওহ আচ্ছা। সরি… বল।

–         তখন সাময়িক ভাবে খুব ভালো লাগলেও যত সময় গেছে তত নিজের ওপর খুব রাগ হয়েছে। বিরক্ত লেগেছে। আর যে শুন্যতা টা কে ভরাট করার জন্যে এসব করছিলাম সেটা আরও বেশি করে কাঁদিয়েছে।

–         কেন?

–         কারন নিজেকে খুব সস্তা করে ফেলেছিলাম ওই সময়ে। নিজের সমস্তটা বিকিয়ে দিয়েছিলাম। যেটা আমার করা উচিত হয় নি। কারন আমি এমন একজন মেয়ে যে ৫ বছর একটি ছেলের সাথে সম্পর্কে থেকেছে loyal হয়ে। একবারের জন্য অন্য কারুর কথা ভাবে নি। সেই মেয়ে কী করে অচেনা অজানা ছেলের সাথে এসব করতে পারল এটা ভেবে ঘেন্না হয়েছে নিজের ওপর।

–         তাহলে তুই কি বলছিস? আমার যেটা ইচ্ছে হচ্ছে সেটা না করতে?

–         না। আমি তা বলছি না। তোর ইচ্ছে হলে তুই এগুলো কর। আমি তোকে judge করার কেউ নই। আমি শুধু আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি যে জিনিস টা চাপা দেওয়ার জন্য তুই এসব করতে চাইছিস সেই জিনিস টা চাপা তো পড়বেই না বরং আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসে তোকে আঘাত করবে।

–         বুঝলাম। Thank you রে।

–         You are welcome. ভালো লোককেই জিজ্ঞেস করেছিস বল?

–         হ্যাঁ জানি।

–         জানি মানে? এই এক সেকেন্ড… তুই হঠাৎ এই কথা গুলো আমায় জিজ্ঞেস করলি কেন?

–         মানে? কোন কথাগুলো?

–         এই যে… ডেটিং অ্যাপ? অচেনা লোকজনের সাথে হুক আপ? এসব নিয়ে? আমি তো তোকে কখনও কিছু বলিনি এসব ব্যাপারে। তুই জানলি কী করে?

–         আরে আমি কিছু জানি না। আমার আজ হঠাৎ এসব ভুল ভাল ইচ্ছে হল… আমি বুঝতে পারছিলাম না কাকে জিজ্ঞেস করব এটা নিয়ে। তাই তোকে জিজ্ঞেস করলাম।

–         ঠিক তো?

–         হ্যাঁ রে। দাঁড়া একটা ফোন আসছে। ২ মিনিট পর টেক্সট করছি।

–         Okay.

–         হ্যালো?

–         কথা বলেছিস ওর সাথে?

–         হ্যাঁ বলছিলাম তো।

–         কী বলল?

–         অনেক কিছুই বলল। আর জিজ্ঞেস করল ওকেই কেন এসব জিজ্ঞেস করছি? আমি কী ওর এই ঘটনা গুলো আগে থেকে জানতাম?

–         এই রে! তুই কি বললি? বলিস নি তো আমি বলেছি তোকে এগুলো? দু’জনের কমন বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ার এই হচ্ছে সমস্যা। দেখ প্লিজ বলিস না। আমায় কিন্তু খেয়ে ফেলবে ও!

–         ও মানুষের মাংস খায় না। আর… না। আমি বলিনি। চাপ নিস না।

–         ওকে বলেছিস তোর এই রিসেন্ট মাইন্ড চেঞ্জের কথা?

–         দেখ আমার মাইন্ড চেঞ্জ হলেই তো হল না। ব্রেক আপ টা তখন মিউচুয়্যাল হয়েছিল। ওর যদি মাইন্ড চেঞ্জ না হয় তাহলে তো আমি প্যাচ আপ করতে চাইলেও কিছু হবে না।

–         আরে হয়ে যাবে। দেখ না। She still loves you.

–         ওই ভরসা তে নিজের আত্মসম্মান জলাঞ্জলি দিতে পারলাম না। শেষ টায় না বললে খুব চাপ হবে।

–         আরে বলবে না। বলে তো দেখ।

–         হুম দেখছি। তুই রাখ এখন।

–         আছিস?

–         হ্যাঁ বল।

–         সরি। একটা বন্ধু ফোন করেছিল। তাই লেট হল।

–         ঠিক আছে। চাপ নেই। বল। কিছু ভাবলি কী করবি?

–         হ্যাঁ? কী নিয়ে?

–         ওই যে ভুলভাল ইচ্ছে হচ্ছে বলছিলি। কী করবি? প্রশ্রয় দিবি ইচ্ছে টা কে?

–         জানি না রে। ভয় লাগছে মাঝে মাঝে। আর তারপর তুই যা বললি… তারপর তো আরও বেশী করে ভাবছি কী করব।

–         হুম। বুঝলাম। All The Best. যাই সিদ্ধান্তই নিস না কেন। আমাকে জানাস পারলে।

–         আমার সাথে বিরিয়ানি খেতে যাবি?

–         What?

–         What?

–         সিরিয়াসলি?

–         হ্যাঁ মানে… as a Thank you… আমি তোকে বিরিয়ানি খাওয়াতে চাই। এই যে এত ভালো উপদেশ দিলি। সেই জন্যেই।

–         এই এক মিনিট দাঁড়া। বাবা ফোন করছে কেন দেখি…

–         আরে উত্তর টা দিয়ে যা…

ওই…

কী রে…

–         হ্যালো?

–         কী বলল? কী বলল?

–         তুই কি ওকে ফোন করেছিলি একটু আগে?

–         হ্যাঁ মানে… জানার চেষ্টা করছিলাম কেস টা।

–         হারামি তুই একটা। দু’দিকে পা দিয়ে চলছিস বল!

–         বেস্ট ফ্রেন্ড হু বাবু। দু’জনের দিক টাই দেখতে তো হবে আমায়। তারপর? কী বলল বল?

–         বিরিয়ানি খেতে যেতে বলল ওর সাথে।

–         ফাটাফাটি। তুই কি বললি?

–         কিছু বলিনি এখনও। বলব।

–         মানে? কেন বলিস নি? যা… হ্যাঁ বল।

–         তুই কি করে জানলি আমি হ্যাঁ বলব?

–         আমাকে দিয়ে ওকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তো মেসেজ করানো করালি? এখন বেশী ন্যাকামো করিস না। আর দয়া করে ওকে বলিস না আমি দু নৌকোয় পা দিয়ে চলি। আমায় খেয়ে ফেলবে ও।

–         ও মানুষের মাংস খায় না। আর না। চাপ নিস না। আমি বলব না।

–         যা… কথা বল। আর ফের যদি ব্রেক আপ করেছিস, দু’জনকেই আমি ফেলে ক্যালাবো হতচ্ছাড়া।

–         ঠিক আছে ঠিক আছে… বাই এখন।

–         হাই।

–         বাপরে। কাকু এতক্ষন আমার কথা বলে আমার ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দিয়েছে।

–         সেকি কেন?

–         কেন মানে? উত্তর টা না দিয়েই তো চলে গেলি।

–         ওহ ওই জন্যে।

–         বল এবার… যাবি বিরিয়ানি খেতে?

–         Um… না।

–         হুম। Okay. Guess করেছিলাম উত্তর টা।

–         সরি। প্লিজ মাইন্ড করিস না।

–         না না করছি না। It’s okay. যেতে ইচ্ছে না করলে জোর করে যাওয়ার দরকার নেই।

–         Thank you বোঝার জন্যে।

–         Yeah. All right.

–         হ্যাঁ। তবে এই গরমে বাইরে খেতে না গিয়ে বাড়িতে বিরিয়ানি অর্ডার করলে আমি রাজি।

–         What? ……… What?  ……. What?

–         একতা কাপুরের সিরিয়ালের মত ৩ বার একই কথা বলছিস কেন?

–         তুই এখনও এক রকম রয়ে গেলি শালা!

–         আরে আগে হ্যাঁ বলে দিতে তোর গল্প টার এন্ডিং টা কেমন যেন ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে যেত।

–         তাই ‘না’ বলে চমকে দিয়ে ‘হ্যাঁ’ বললাম।

–         -_- বাল একটা!

হয়তো তোমারই জন্য

Arnab Mondal


হিজিবিজি লেখা আর বিরিয়ানি নিয়ে Phd করছি আর আকাশবাণী কলকাতায় নিজের কন্ঠস্বর ভাড়া দিয়ে সংসার চালাচ্ছি।


Post navigation


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করবেন না দাদা/দিদি