লিখেছেন অমৃতা সাহা

– বাহ! দারুন লাগছে তো তোকে আজ। সেই কালো কূর্তিটা না?
– আজ্ঞে না। এটা সেই কালো কূর্তিটা না, এটা নতুন।
– ওহ! তাই তো। বুঝতে পারিনি।
– সেই। সারাক্ষণ অন্য মেয়েদের দেখলে আর কিভাবে এসব বুঝবি বল!
– কি? আমি মেয়ে দেখি?
– না না। তুই ছেলে দেখিস!
– 
– জানিস আমার না একটা ম্যাক-বুক লাগবে, টাকা দে না। তোর তো প্রচুর টাকা!
– আমার প্রচুর টাকা তোকে কে বলেছে রে ছাগল?
– প্রচুর টাকা না থাকলে কেউ রোজ রোজ নতুন নতুন জামা কিনতে পারে?
– ওহ! আরে না না ওই কূর্তিটা আর পরিনা। তাই এটা কিনলাম গত মাসে।
– পরিস না কেন? ভালোই তো ছিল ওটা।
– ওটা পরিনা তার কারণ আছে। জামাটা একটু প্রবলেমেটিক।
– মানে? টাইট হয়?
– আরে না রে ছাগল! জামাটা পরলেই কিছু না কিছু খারাপ হয়। যতবার জামাটা পড়েছি, কিছু না কিছু খারাপ হয়েছে। তাই আর পরি না।
– মানে? কি সব বলছিস? এসব আবার হয় না কি? আর তুই আবার এসব কবে থেকে বিশ্বাস করিস?
– আরে না না, তুই জানিস আমি superstitious নই। But, বিশ্বাস কর যতবার-ই আমি ওই কুর্তিটা পড়েছি, কিছু না কিছু খারাপ হয়েছে।
– তাই? তা কি কি হয়েছে শুনি।
– এই যেমন ধর একদিন ওটা পরে ইউনিভার্সিটি বেরোতে যাচ্ছি, অমনি মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হল, টানা এমন বৃষ্টি হল যে ইউনিভার্সিটি যাওয়া-ই হল না। আর সেই যে একদিন ইউনিভার্সিটি থেকে ফেরার সময় সেই ভুল বাসে উঠে ভুল জায়গায় নেমে সেই যা তা অবস্থা হল না? সেদিন-ও ওই কুর্তিটাই পড়েছিলাম।
– ওহ! এই জন্য জামাটা অপয়া হয়ে গেল? কি যা তা, তোর মত মেয়ে না কি এসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করছে আজকাল! 
– আরে তুই ওই কূর্তিটা না পড়ার আসল কারণটা-ই তো শুনলি না।
– কি? শুনি।
– ওটা পড়লেই তোর সাথে কিছু না কিছু নিয়ে ঝামেলা হয়। যতবার ওটা পড়েছি, প্রায় প্রত্যেকবার-ই তোর সাথে ঝামেলা হয়েছে। তাই আর ওটা পড়িনা।
– ধুর! আমার সাথে ঝামেলা তো তোর সব জামা পরেই হয়েছে আবার কিছু না পরেও হয়েছে!! তাতে আর কী এসে যায়!
– ইস! কি অসভ্য তুই। বাল একটা! 

 

হৃদয় মাঝে ৫

Arnab Mondal


হিজিবিজি লেখা আর বিরিয়ানি নিয়ে Phd করছি আর আকাশবাণী কলকাতায় নিজের কন্ঠস্বর ভাড়া দিয়ে সংসার চালাচ্ছি।


Post navigation


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করবেন না দাদা/দিদি