১
কোনো কিছুতেই কেয়ার না করার একটা মজা আছে। কেউ কিছু বললেও গায়ে লাগে না। কেউ কিছু ভাবলেও গায়ে লাগে না। রাই জানে ওদের অফিসের বস পবিত্র দা ওর দিকে কীভাবে তাকায়। কিন্তু ঐ যে… কিছু কেয়ার না করলে কিচ্ছু যায় আসে না। একবার তো ওকে নিজের রুমে ডেকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেছিল পবিত্র দা, “রাই, তুমি কি চাও তোমার প্রোমোশন হোক?”
প্রোমোশন হোক সেটা কেই বা চায় না। কিন্তু তার বদলে যে কিছু দিতে হবে সেটা রাই ভালোভাবেই জানতো। পবিত্র দা কথা বলার সময় কনস্ট্যান্ট বুকের দিকে তাকিয়ে থাকে এটাও ও দেখেছে, কিন্তু পাত্তা দেয় নি। যাই হোক পবিত্র দার প্রশ্নের উত্তরে ও সাথে সাথেই বলেছিল, “নাহ। চাই না।”
পবিত্রদা অবাক হয়ে বলেছিল, “তোমার প্রোমোশন চাই না? সত্যি?”
রাই বলেছিল, “না স্যার। চাই না। এই তো বেশ আছি!”
পবিত্র দা ওর বুকের দিকে ফসকে গেলো সুলভ চোখে তাকিয়ে বিষন্ন গলায় বলল, “ঠিক আছে। তুমি যাও এখন। দেবলীনা কে একটু ডেকে দাও।”
ওর দিন কয়েক পরেই দেবলীনার প্রোমোশন হয়ে যায়! তবে সত্যি কথা বলতে কী তা নিয়ে রাই এর কিছু যায় আসে নি। কোনো কিছুতেই আসে না সাধারনত। তবে কয়েকদিন পর একটা ঘটনা ঘটল যেটার জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিল না রাই।
সেদিন একটা খুব ইম্পর্ট্যান্ট প্রেজেন্টেশন ছিল রাই এর। এমনিতেই একটু লেট হয়ে গিয়েছিল রাই এর। তাড়াতাড়ি করে মিটিং হল এ ঢুকতে গিয়ে দেখল পবিত্রদাও তখন ঢুকবে বলে আসছে। ও ঢোকার জন্য দরজাটা খোলার পরেই পবিত্র দা ঢুকে গেল ওর আগে। ঠিক সেই সময়ই রাই অনুভব করল ওর বুক টায় কয়েক মুহুর্তের জন্য একটা হাত পড়ল। এটার জন্য রাই প্রস্তুত ছিল না একেবারেই। তাকিয়ে থাকা এক জিনিস। গায়ে হাত দেওয়া আর এক জিনিস। তখন প্রেজেন্টেশন এর সময় হয়ে গিয়েছে। কাজেই তখন আর সিন ক্রিয়েট করলো না রাই।
এদিকে প্রেজেন্টেশন শুরুর আগে আর এক ঝামেলা। রাই ভেবেছিল ওর ফোন টা ব্লুটুথ দিয়ে ল্যাপটপের সাথে কানেক্ট করে তারপর পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড গুলো ফোন দিয়েই কন্ট্রোল করবে। কিন্তু ফোন কানেক্ট করতে গিয়ে দেখা গেল ওর ফোনে চার্জ শেষ। খালি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ফোন টা। সমস্যার সমাধান করল পবিত্র দা। উনি বললেন, “Here. রাই use my phone.”
রাই আর কথা বাড়ায় নি।
২
প্রেজেন্টেশন এর পর রাই একবার বাথরুমে গিয়েছিল। তারপর নিজের কিউবিকলেই বসেছিল। হঠাৎ দেবলীনা এসে বলল, “স্যার ডাকছে তোকে।”
রাই উঠে পবিত্রদার ঘরের দিকে যাওয়ার সময়েই একটা ফোন এল ওর ফোনে। মৌসুমী ফোন করছে। ফোন টা কেটে দিয়ে পবিত্র দার ঘরে ঢুকল ও।
পবিত্র দার মুখ দেখে মনে হল প্রচন্ড রেগে আছে। মুখ চোখ লাল। ওকে দেখেই চেঁচিয়ে বলল, “How Dare You? এত বড় স্পর্ধা তোমার?”
রাই জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছে স্যার?”
পবিত্র দা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলল, “কি হয়েছে? ন্যাকাচোদামি হচ্ছে আমার সাথে? কি পাঠিয়েছো তুমি আমার স্ত্রীর ফোনে?”
রাই বলল, “আরে আপনি এমন ভাবে আমার বুকের দিকে তাকিয়ে থাকেন সব সময়, তাই ভাবলাম বৌদির গুলো হয়তো ছোটো। সেই জন্যেই আমার বুকের কিছুটা অংশের ছবি পাঠিয়েছিলাম। আর বললাম বৌদি কে সব। তাছাড়া আমি ভাবলাম বাড়ি গিয়ে দেখতে ইচ্ছে হলে বৌদির ফোনে দেখে নিতে পারবেন যখন ইচ্ছে!”
পবিত্র দা এবার চেঁচিয়ে বলল, “তুমি জানো আমি তোমায় কী করতে পারি?”
রাই খুব শান্ত ভাবেই বলল, “বুকে তো আজকেই হাত দিয়ে দিলেন স্যার। আর কি করবেন? রেপ করার চেষ্টা করতে পারেন। তার বেশী আর কী করবেন?”
“বেরিয়ে যাও তুমি।” পবিত্র দা বলল, “কাল থেকে আসতে হবে না অফিসে।”
রাই বলল, “কাল থেকে আমি এমনিতেও আসতাম না। আজকেও চলে যেতাম। বাইরে খুব গরম। তাই ভাবলাম AC তে একটু বসি।… যাই হোক… চলি স্যার… আর একটা কথা…”
পবিত্র দা একটু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো। কিন্তু কিছু বলল না।
রাই নিজেই আবার বলল, “বৌদি কে বলবেন ফ্লিপকার্ট এ একটা ক্রীম পাওয়া যায়। সেটার লিংক টা আমি পাঠিয়ে দেবো। ওটা নিয়মিত ব্যবহার করলে আমার মত বুক হলেও হতে পারে। দেখুন কী হয়। ছবি তো পাঠিয়েই রেখেছি। মিলিয়ে দেখে নেবেন। Bye.”
জানোয়ার টা কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রাই বেরিয়ে গেল ঘর থেকে। তখনই আবার ফোন এল মৌসুমীর। ও ফোন ধরে বলল, “এই শোন না… আমি ফোন করেছিলাম তখন… তোদের অফিসে একটা Vacancy আছে বলছিলি না… সেটা কী আছে এখনও?”