– বোসো অনর্থ। তোমায় কেন ডেকেছি তুমি জানো?
– এখনও জানিনা। তবে এবার জেনে যাবো?
– কীভাবে জানবে?
– এই তো আপনি বলবেন।
– ওহ আচ্ছা। হুম। দেখো… বেশ কয়েক মাস ধরেই দেখছি তোমার কাজ গুলো ঠিক ঠাক হচ্ছে না। সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট এর কোয়্যালিটি ও পড়ে গেছে আগের থেকে। তোমার কি মনে হয়?
– আমার মনে হয় আপনি বেশী চাপ নিচ্ছেন। সব একই রকম আছে।
– নাহ। আমি চাপ নিচ্ছি না। কিছু সমস্যা তো হচ্ছে নিশ্চয়।
– আমার হচ্ছে না।
– কিন্তু আমার হচ্ছে। তাই বলছিলাম যে কিছুদিনের জন্য তুমি একটু ব্রেক নাও। এ পুজো গেল। কয়েকদিন ছুটি নাও। আমরাও নতুন কাউকে ট্রাই করে দেখি। তারপর না হয় তুমি পরে আবার জয়েন করবে।
– আচ্ছা একটা প্রশ্ন ছিল…
– কি বল?
– বলছিলাম যে আমার তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আপনার হচ্ছে। তাহলে আপনি কয়েকদিন ব্রেক নিন না। আমরা অন্য কোনো বস কে Try করে দেখি। তারপর কয়েক মাস পর আপনি আবার জয়েন করবেন…
– আমি… (হেসে) বাহ। তোমার Sense of Humor তো বেশ ভালো হে।
– না মানে… আমি সিরিয়াসলি…
– যাই হোক… শোনো আজ তুমি এসো অনর্থ। যখন দরকার হবে আমরা তোমায় ডেকে নেবো।
– একটা কথা বলার ছিল…
– কী?
– বলছি বাইরে বেশ চড়া রোদ। একটু রোদ টা কমা অবধি অফিসে বসি? তারপর না হয়…
– Um… Okay. তাই করো। Have a nice day.

– হ্যালো
– হ্যাঁ স্যার বলুন।
– কী করেছো কি তুমি?
– কি করেছি স্যার?
– ন্যাকামি হচ্ছে আমার সাথে?
– কোথায় হচ্ছে স্যার? ন্যাকামি।
– আমাদের অ্যাকাউন্ট এর পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করেছো কেন?
– এমনি স্যার। ইচ্ছে হল।
– এক্ষুনি পাসওয়ার্ড বলো।
– না।
– মানে? ইয়ার্কি নাকি?
– না না। সিরিয়াসলি বলব না।
– এরকম করছো কেন তুমি? আমাদের প্রোফাইল টা কতটা ইম্পর্ট্যান্ট তুমি জানো না?
– জানি স্যার। সেই জন্যেই পাসওয়ার্ড টা পালটে দিয়েছি।
– How Dare You? এটা একটা অফিস। ফাজলামো করার জায়গা নয়? পাসওয়ার্ড বলো নাহলে এই কোম্পানীতে নিজের চাকরির আশা ছেড়ে দাও সারা জীবনের জন্য।
– আচ্ছা।
– কি আচ্ছা?
– ছেড়ে দিলাম স্যার।
– অনর্থ কেন এরকম করছো? Come On. Be Professional. এরকম কোরো না বাচ্চাদের মত। পাসওয়ার্ড টা বলো।
– অফিসে মৌসুমী আছে স্যার?
– হ্যাঁ আছে। কেন? দেবো?
– হ্যাঁ একবার দিন না।
– ওকে বলবে?
– আপনি দিন না ফোন টা…
– (মৌসুমী) হ্যাঁ বলো।
– বলছি আমি আর্সেলান যাচ্ছি। তোমার কাজ হলে চলে এসো।
– আর পাসওয়ার্ড?
– কি পাসওয়ার্ড?
– ঐ যে কোম্পানীর অ্যাকাউন্ট এর।
– ধুর! ও আমি ভুলেই গেছি।
– মানে?
– মানে… পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করার সময় আমি চোখ বন্ধ করে র‍্যান্ডম কত গুলো সুইচ টিপে দিয়েছিলাম। যাই হোক… চলে এসো তাড়াতাড়ি।
– আচ্ছা।
– (ইন্দ্রনীল দা) অনর্থ?
– হ্যাঁ স্যার। এবার রাখতে হবে।
– পাসওয়ার্ড টা বলো। গুরুত্বপূর্ণ একটা পোস্ট করতে হবে।
– আমি জানিনা স্যার।
– মানে? What do you mean তুমি জানো না? তুমি চেঞ্জ করো নি?
– হ্যাঁ করেছি। কিন্তু আমি জানিনা।
– কী বলছো?
– আপনি মৌসুমীর কাছ থেকে শুনে নিন। আমি বেরোই। বিরিয়ানি খেতে যাবো।
– এরকম কোরো না। অনর্থ? প্লিজ? আমি তোমার দাদা হিসেবে তোমায় বলছি। এই অ্যাকাউন্ট টা খুব ভাইটাল আমাদের জন্য।
– স্যার?
– হ্যাঁ বলো।
– মৌসুমি কে বলবেন কাজ হয়ে গেলে পার্ক সার্কাস আর্সেলান চলে আসতে। লেট যেন না করে। Bye.

অনর্থ ৫

Arnab Mondal


হিজিবিজি লেখা আর বিরিয়ানি নিয়ে Phd করছি আর আকাশবাণী কলকাতায় নিজের কন্ঠস্বর ভাড়া দিয়ে সংসার চালাচ্ছি।


Post navigation


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করবেন না দাদা/দিদি