হ্যালো
– হ্যাঁ কে?
– আমি বলছি রে রুনু।
– আমি কে?
– আমাকে চিনতে পারছিস না মা?
– সত্যি পারছি না। কে বলুন তো আপনি।
– স্বাভাবিক। আসলে অনেক দিন হয়ে গেল তো! তাই হয়তো!
– কে বলছেন একটু বলবেন কী? আমার কাজ আছে।
– ওরে আমি তোর নারান কাকা।
– নারান কাকা? আপনি…???? আপনি তো…
– নারে মরিনি আমি। বেঁচেই আছি বেশ।
– কিন্তু আপনি তো সেই কবেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।
– হ্যাঁ রে। এসব ভোগ এর জীবন আমার জন্যে নয়। তাই চলে গিয়েছিলাম। আর ফিরবো না।
– এখন কোথায় আছেন?
– এখন আছি হিমালয় এ। সন্নাসী হয়ে গিয়েছি।
– এত ঠান্ডায়?
– ঠান্ডা কীরে মা? সবই মায়া বুঝলি কিনা। আর কষ্ট না করলে কেষ্ট কী মেলে?
– আর খাওয়া দাওয়া?
– ওই ভক্তরা যা দেয় তাই খায়। আমার কোনো অসুবিধে হচ্ছে না দিব্যি হচ্ছে।
– আপনি আর ফিরবেন না?
– নাহ রে। আর ফিরবো না। এই এক টা ভক্তের ফোন থেকে তোদের ফোন করছি।
– ওহ! আচ্ছা। মা এখনো আপনার কথা বলে!
– আমার কথা ছাড়। যেটা বলতে ফোন করেছিলাম শোন…
– হ্যাঁ বলুন।
– বলছিলাম যে যখন বাড়ি ছেড়ে বেরিয়েছিলাম তখন তোর কোলে একটা ফুটফুটে বাচ্চা।
– হ্যাঁ কাকু তখনই তো বাবান হয়! এখন অবশ্য আর ছোট্টো টি নেই।
– আচ্ছা তা ভালো। বলছিলাম যে ওর মাধ্যমিক এর রেজাল্ট কেমন হল? এটা জানতেই ফোন করেছিলাম আসলে। পাশ করেছে তো?
– ওর তো এই বছর নাইন হল। পরের বছর মাধ্যমিক. আসলে আমরা একটু দেরীতে ভর্তি করেছিলাম স্কুলে। সেই জন্যেই —
*ঠক*
– হ্যালো? হ্যালো? কাকু?? হ্যালো????
ফোনটা রেখে এসি টা চালিয়ে বসলেন নারায়ন রায়চৌধুরী। লন্ডনেও এখন বেশ গরম পড়েছে। নাহ! কেসটা জমল না। “রেজাল্ট খুব একটা ভালো হয়নি” শুনতে আরও একটা বছর অপেক্ষা করতে হবে!