– আরে আরে কী হল?
– কিছু না। বসুন।
– আরে ঠিক আছে। আপনি উঠলেন কেন?
– মানে? এটা লেডিস সীট তো। খালি ছিল তাই বসেছিলাম।
– তাহলে উঠলেন কেন?
– আশ্চর্য প্রশ্ন করেন তো আপনি? আপনি এসেছেন তাই উঠলাম। এটা তো জেন্টস সীট নয়।
– আরে বসুন বসুন। আমার এখন বসতে ইচ্ছে করছে না৷ অন্য কোন মহিলা এলে উঠে যাবেন।
– আচ্ছা বেশ। থ্যাঙ্কস!
– ওয়েলকাম।
– আমি আদিত্য।
– আমি পাঞ্চালী।
– অ্যাঁ!!!
– না না! আমি বাঁকুড়া মিম রিপোর্ট করিনি। সেই পাঞ্চালী নই আমি।
– ওহ! ভয় লাগিয়ে দিয়েছিলেন!
– জানি। এটাই তো নামটার মাহাত্ম্য!
– কফি খেতে ভালোবাসেন?
– দেখুন আমি আপনাকে লেডিস সীটে বসে থাকতে বলেছি। সব চরিত্র কাল্পনিক এর প্লট ভাবতে নয়।
– আজ্ঞে?
– আপনি ভাবছেন মেট্রোতে অচেনা মহিলার সাথে কথা বলবেন তারপর আর একটা সব চরিত্র কাল্পনিকের প্লট হয়ে যাবে সেটা কিন্তু হওয়ার নয়। ফালতু লাইন মারার চেষ্টা করবেন না।
– ওকে! সরি। এনিওয়ে আপনি বসুন। আমি উঠি।
– আরে? কী হল?
– কিছু না। Nice to meet you. Bye. আমাকে নামতেও হবে!
– আরে ও মশাই!!!
– …
– ও আদিত্য বাবু শুনুন না!.
– …
– ধুত্তোরি! এই যে!!! শুনছেন?
– আরে? একি? আপনিও নামলেন কেন?
– টালিগঞ্জে থাকেন নাকি?
– আজ্ঞে না। নামার সময় আপনার মানিব্যাগ টা সীট এ ফেলে গেলেন তো! এটাই দিতে নামলাম।
– এটা আমার না.
– মানে? আপনি যেখানে বসেছিলেন সেখানেই পড়েছিল তো!
– হতে পারে। কিন্তু আমার নয় এটা।
– যাহ তেরি!!
– শুধু শুধু নামলাম আমি! এবার কী করা যায়?
– অনেক কিছুই করা যায়। কিন্তু মেট্রো তে না করাই ভালো। কামেরা আছে!
– ইসস! সুযোগ পেলেই ডুয়্যাল মিনিং ঢুকিয়ে দিচ্ছেন কথার মাঝে! মহা অসভ্য আপনি।
– জানি।
– জানি মানে? আপনার লজ্জা করছে না?
– লজ্জা তো নারীর ভূষণ। আমি তো পুরুষ!
– আবার একটা সেক্সিস্ট কমেন্ট। আপনাকে মহিলা সীটে বসতে দেওয়াই উচিত হয় নি।
– আচ্ছা যাই হোক, আমি আসি। Good Luck with the wallet.
– এটা সত্যি আপনার নয়?
– কত টাকা আছে ভেতরে?
– ১৮০০ টাকা।
– ওহ। হ্যাঁ। আমারই তো!
– ওমনি না। টাকার অংক শুনেই আপনার পার্স হয়ে গেল এটা?
– আরে সত্যি আমার এটা। আপনি যাতে মেট্রো থেকে নামেন আমার পেছন পেছন তার জন্যে ওটা ফেলে নেমেছিলাম মেট্রো তে।
– গল্প গল্প। বিশ্বাস করিনা। প্রমান দিন।
– আরে! কি প্রমান দেবো??
– জানিনা। যা খুশি! কিছু প্রমান না দিলে আপনাকে দেবো কী করে আমি?
– দিতে চান?
– ইসস! ছি! আমি পুলিশ ডাকছি!
– আরে দাঁড়ান দাঁড়ান। কয়েন যেখানে থাকে সেখানে একটা ভাঁজ করা কাগজ আছে। দেখুন।
– এক মিনিট… হ্যাঁ আছে তো! তাতে কী প্রমান হয়? এটা কোনো প্রমান নয়।
– আরে ধুর। কাগজ টায় কী লেখা আছে পড়ুন জোরে জোরে।
– সব… চরিত্র… কাল্পনিক… ১২…
– এবার বিশ্বাস হল?
– আপনার ফোনে নেটওয়ার্ক আছে?
– কেন? মাকে ফোন করে বলবেন পাত্র পেয়ে গেছেন?
– নাহ। কলকাতা পুলিশ কে ফোন করব। আমার টায় নেটওয়ার্ক নেই।
– অ্যাঁ!! আমি ঠিক ধরেছিলাম আপনি সেই পাঞ্চালী। এরকম করলে খেলব না।
– আপনাদের মত আল বাল পাব্লিক রাস্তায় ঘুরলে ওরকম পাঞ্চালীরও দরকার হয় বই কি!
– -_-

সব চরিত্র কাল্পনিক ১২

Arnab Mondal


হিজিবিজি লেখা আর বিরিয়ানি নিয়ে Phd করছি আর আকাশবাণী কলকাতায় নিজের কন্ঠস্বর ভাড়া দিয়ে সংসার চালাচ্ছি।


Post navigation


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করবেন না দাদা/দিদি